===তালাকে তাফবীজ বিষয়ক ফতোয়া===
প্রশ্ন:
স্বামী স্ত্রী ঝগড়াঝাটি ও বনিবনা না হওয়ার দরুন স্ত্রী স্পষ্ট করে স্বামীকে বলে;
❝আমি উনার(স্বামীর) সাথে থাকতে ইচ্ছুক না। আমি তালাক চাই❞
স্বামী অধিকার দিয়ে বলে;
❝তালাক্ব দেয়ার অধিকার আপনাকে এই মুহূর্তে আপনাকে অর্পন করলাম। আপনি যেহেতু আমার সাথে থাকবেন না সেহেতু আপনি বলে ফেলেন।❞
তারপর স্ত্রী নিজের উপর এই বলে একে একে তিন তালাক দেয় এই বলে;
❝আমি আমার তালাকের অধিকার থেকে নিজকে আপনার পক্ষ থেকে তালাক দিচ্ছি-
১ তালাক, ২ তালাক, ৩ তালাক❞
মুহতারামের নিকট প্রশ্ন হলো উপরোক্ত ভাষ্য অনুযায়ী তালাকের হুকুম কি হবে?
(নোট: ফতোয়াটি হাতে পাওয়ার পর আমরা স্বামীর বক্তব্য তলব করি। সেখানে তিনি সাধারণ ভাবে তালাক দেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং তিন তালাক দেয়ার কথা অস্বীকার করেন।)
উত্তর:
الجواب باسم ملهم الصواب
শরীয়তের মূলনীতির আলোকে তালাক দেয়ার হকদার হলেন স্বামী তবে স্বামী চাইলে এই অধিকার তার স্ত্রীকে দিতে পারে।
ফিকহ-ফতোয়ার দৃষ্টিতে স্বামীর বক্তব্য এবং তিনি যে ধরনের শব্দ প্রয়োগ করে তালাকের অধিকার অর্পণ করেছেন এসব দ্বারা বুঝা যায় স্ত্রী নিজের উপর যে তালাক দিয়েছেন তা একটি রজয়ী তালাক হয়েছে ।
যা তালাকের ইদ্দত চলাকালীন সময়ে তথা গর্ভবতী হলে সন্তান জন্ম দান অথবা গর্ভবতী না হলে তিন হায়েজ/পিরিয়ড পযর্ন্ত স্বামী চাইলে স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে পারে।
এবং ইদ্দত শেষ হওয়ার পর স্ত্রী চাইলে অন্যত্র বিবাহ করতে পারে। অথবা আগের স্বামীর সাথে নতুনভাবে মোহর ধার্য্য করে বিবাহ করতে পারে।
স্বামীর তিন তালাকের নিয়ত না থাকায় স্ত্রী তিন তালাক বললেও তা কার্যকর হবে না।
◾দলিলসমূহ:
☞আল হিদায়াহ (১)
☞আল ইখতিয়ার (২)
☞বাদাঈয়ুস সনাঈ (৩)
☞রদ্দুল মুহতার (৪)
◾টীকা:
(১)
ﻭﻣﻦ ﻗﺎﻝ ﻻﻣﺮﺃﺗﻪ ﻃﻠﻘﻲ ﻧﻔﺴﻚ ﻭﻻ ﻧﻴﺔ ﻟﻪ ﺃﻭ ﻧﻮﻯ ﻭاﺣﺪﺓ ﻓﻘﺎﻟﺖ ﻃﻠﻘﺖ ﻧﻔﺴﻲ ﻓﻬﻲ ﻭاﺣﺪﺓ ﺭﺟﻌﻴﺔ ﻭﺇﻥ ﻃﻠﻘﺖ ﻧﻔﺴﻬﺎ ﺛﻼﺛﺎ ﻭﻗﺪ ﺃﺭاﺩ اﻟﺰﻭﺝ ﺫﻟﻚ ﻭﻗﻌﻦ ﻋﻠﻴﻬﺎ " ﻭﻫﺬا ﻷﻥ ﻗﻮﻟﻪ ﻃﻠﻘﻲ ﻣﻌﻨﺎﻩ اﻓﻌﻠﻲ ﻓﻌﻞ اﻟﺘﻄﻠﻴﻖ ﻭﻫﻮ اﺳﻢ ﺟﻨﺲ ﻓﻴﻘﻊ ﻋﻠﻰ اﻷﺩﻧﻰ ﻣﻊ اﺣﺘﻤﺎﻝ اﻟﻜﻞ ﻛﺴﺎﺋﺮ ﺃﺳﻤﺎء اﻷﺟﻨﺎﺱ ﻓﻠﻬﺬا ﺗﻌﻤﻞ ﻓﻴﻪ ﻧﻴﺔ اﻟﺜﻼﺙ ﻭﻳﻨﺼﺮﻑ ﺇﻟﻰ ﻭاﺣﺪﺓ ﻋﻨﺪ ﻋﺪﻣﻬﺎ ﻭﺗﻜﻮﻥ اﻟﻮاﺣﺪﺓ ﺭﺟﻌﻴﺔ ﻷﻥ اﻟﻤﻔﻮﺽ ﺇﻟﻴﻬﺎ ﺻﺮﻳﺢ اﻟﻄﻼﻕ ﻭﻟﻮ ﻧﻮﻯ اﻟﺜﻨﺘﻴﻦ ﻻ ﺗﺼﺢ ﻷﻧﻪ ﻧﻴﺔ اﻟﻌﺪﺩ ﺇﻻ ﺇﺫا ﻛﺎﻧﺖ اﻟﻤﻨﻜﻮﺣﺔ ﺃﻣﺔ ﻷﻧﻪ ﺟﻨﺲ ﻓﻲ ﺣﻘﻬﺎ
[আল হিদায়াহ ১/২৩৭]
(২)
ﻭﻟﻮ ﻗﺎﻝ ﻟﻬﺎ: ﻃﻠﻘﻲ ﻧﻔﺴﻚ ﻓﻠﻬﺎ ﺃﻥ ﺗﻄﻠﻖ ﻓﻲ اﻟﻤﺠﻠﺲ ﻭﺗﻘﻊ ﻭاﺣﺪﺓ ﺭﺟﻌﻴﺔ، ﻭﻟﻴﺲ ﻟﻪ ﺃﻥ ﻳﺮﺟﻊ ﻋﻨﻪ، ﻭﺇﻥ ﻃﻠﻘﺖ ﻧﻔﺴﻬﺎ ﺛﻼﺛﺎ ﻭﻗﺪ ﺃﺭاﺩﻫﺎ اﻟﺰﻭﺝ ﻭﻗﻌﻦ
[ আল ইখতিয়ার ৩/১৩৬ ]
(৩)
ﻭﻟﻮ ﻗﺎﻝ ﻻﻣﺮﺃﺗﻪ: ﻃﻠﻘﻲ ﻧﻔﺴﻚ ﻭﻧﻮﻯ ﺑﻪ اﻟﺜﻼﺙ ﺻﺤﺖ ﻧﻴﺘﻪ ﺣﺘﻰ ﻟﻮ ﻗﺎﻟﺖ: ﻃﻠﻘﺖ ﻧﻔﺴﻲ ﺛﻼﺛﺎ ﻛﺎﻥ ﺛﻼﺛﺎ؛
[বাদাঈয়ুস সনাঈ ৩/১০৪]
(৪)
(ﻗﻮﻟﻪ ﺃﻭ ﻃﻠﻘﻲ ﻧﻔﺴﻚ) ﻫﺬا ﺗﻔﻮﻳﺾ ﺑﺎﻟﺼﺮﻳﺢ ﻭﻻ ﻳﺤﺘﺎﺝ ﺇﻟﻰ ﻧﻴﺔ ﻭاﻟﻮاﻗﻊ ﺑﻪ ﺭﺟﻌﻲ؛ ﻭﺗﺼﺢ ﻓﻴﻪ ﻧﻴﺔ اﻟﺜﻼﺙ ﻛﻤﺎ ﺳﻴﺬﻛﺮﻩ اﻟﻤﺼﻨﻒ ﺃﻭﻝ ﻓﺼﻞ اﻟﻤﺸﻴﺌﺔ
[রদ্দুল মুহতার ৩/৩১৫]
الله أعلم بالصواب و هو ولي الرشاد.
উত্তর প্রদানে:
মুফতী শাহেদ আমীন।
জামি'আ ইসলামিয়া দারুল ফালাহ ঢাকা।
