বরিশাল বিভাগ এর ঝালকাঠিতে জমে উঠেছে ভাসমান পেয়ারার হাট, নেমেছে পর্যটকদের ঢল।

 

মোঃ আল আমিন মল্লিক, স্টাফ রিপোর্টার 

কোভিড ১৯ এর বিধিনিষেধ সরকারি  ভাবে তুলে নেয়ার পর ঝালকাঠির খালে-বিলে পেয়ারার ভাসমান হাট ও বাগান দেখতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে।প্রতিদিন ভোর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ভাসমান পেয়ারা হাট ও বাগানের প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন।


স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের তিন জেলার ৫৫ গ্রামে পেয়ারার চাষ হয়। বরিশাল, ঝালকাঠি ও পিরোজপুরে কয়েক হাজার মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছে এ পেয়ারা। বর্ষা কাল এলেই  বিশেষ করে আষাঢ়, শ্রাবণ ভাদ্র এই ৩ মাস এলাকার নদী-খালে বসে ভাসমান পেয়ারার হাট। এসব হাট থেকে সুস্বাদু এই  পেয়ারা সারাদেশে  সরবরাহ করা হয়।


ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভীমরুলি বিলসহ বিভিন্ন খালে পেয়ারার ভাসমান হাট এখন জমজমাট। এ হাটে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি জাতের প্রতি মণ পেয়ারা ৪৫০ টাকা পাইকারি দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে থাই জাতের পেয়ারা প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৮০০ টাকায়।


স্থানীয়  কৃষি বিভাগ, পেয়ারা চাষি ও বাগান মালিক জানান, এ বছর ঝালকাঠি  সদর উপজেলার ২১ গ্রামে এক হাজার ৮৫০ একর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়েছে। এর মধ্যে কীর্তিপাশা ইউনিয়নের ভীমরুলি, কীর্তিপাশা, খোদ্দবরাহর, বেশাইন খান, শংকর ধবল, মীরাকাঠি, ভৈরমপুর, ডুমুরিয়া, খেজুরা, বেউখান, স্থানসিংহপুর ও নবগ্রাম ইউনিয়নের নবগ্রাম, হিমানন্দকাঠি, দাড়িয়াপুর, সওরাকাঠি ও কঙ্গারামচন্দ্রপুর গ্রামে সবচেয়ে বেশি পেয়ারা উৎপাদন হয়েছে।


স্থানীয়  ভীমরুলি বিলকে কেন্দ্র করে  পেয়ারা বাগানের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র পর্যন্ত তিনমাস ভাসমান নৌকায় বসে পেয়ারার হাট। চাষিরা নৌকায় পাইকারি ও খুচরায় পেয়ারা কেনাবেচা করেন।


প্রায় ২০০ বছর আগে ভীমরুলি বিলের আশপাশে পেয়ারার আবাদ শুরু হয়। এ জাতটি আনা হয়েছিল ভারতের তীর্থস্থান গয়া থেকে। পরে এটি স্বরূপকাঠি জাত নামে পরিচিতি পায়।  এখানকার মানুষ গুলো  বংশ পরম্পরায় এই রশালো পেয়ারা চাষ করে। জানা যায় যে মূলত  মাঘ-ফাল্গুন মাসে পেয়ারা গাছে ফুল আসে। আর ফল পাকা শুরু হয় আষাঢ় মাসে।


কীর্তিপাশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রহিম মিয়া বলেন, ঝালকাঠির পেয়ারা রাজ্যের সঙ্গে মিশে আছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি। আষাঢ়, শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে পেয়ারার ভরা মৌসুম। এসময় দেশি-বিদেশি পর্যটকরা ভাসমান পেয়ারা হাট-বাগান ও প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করেন।


 চাষিরা যে আবাদে লাভ বেশি পাবেন সেদিকেই আগ্রহী হবেন। যার ফলে এ এলাকার মানুষ পেয়ারা চাষে ঝুকছেন বেশি। বলে জানান ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মোঃ ফজলুল হক 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম