সেনবাগ প্রতিনিধি - নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার কাদরা ইউনিয়নের নন্দীরপাড় গ্রামে জন্মদিনের দাওয়াত থেকে এক প্রবাসীর স্ত্রী (২২) কে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত ঘটনায় সেনবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
ভিকটিম সাংবাদিকদের কে জানান, ছয় বছরের কন্যা সাইকাকে নিয়ে ২০ আগষ্ট শুক্রবার সন্ধ্যায় পাশবর্তী নন্দীরপাড় গ্রামের বান্ধবী রিমার জম্ম দিনের অনুষ্ঠানে যোগদান করি। রাত ১০টায় নন্দীরপাড়ে রিমার আমন্ত্রণে আসা বিকটিম ও রাজন নামের এক যুবককে স্থানীয় যুবক ফরহাদের নেতৃত্বে ৭/৮ জন সহযোগী তাদেরকে জোর করে তুলে নিয়ে যায় ভূঁঞা বাড়ীর লেদু মিয়ার বিল্ডিং এ। সেখানে দুইজনের মধ্যে পরকিয়ার অভিযোগ তুলে রাজনের কাছে ২০ হাজার টাকা এবং ভিকটিমের নিকট ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে তাদের দু'জনকে আটক করে রাখে ফরহাদ।
এ সময় দাগনভূঁঞার দরবেশেরহাটের আওয়ামীলীগের এক নেতা আটককৃত রাজনকে ছেড়ে দিতে মুঠোফোনে ফরহাদকে অনুরোধ করে। পরে রাত সাড় ১০টায় রাজনের পিতা ও ভাই ঘটনাস্থলে এসে লেদু মিয়ার বিল্ডিং থেকে আটককৃত রাজনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এরপর ফরহাদ ভিকটিমের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় ফরহাদ ভিকটিমকে কুপ্রস্তাব দেয়। কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে মারধর করে সে। পরে তার ৪ সহযোগীকে বিল্ডিং এর বাহিরে পাহারা বসিয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে পাশবিক নির্যাতন চালায় ফরহাদ।
স্বামী সংসার শিশুর কথা বলে বার বার কান্নাকাটি করেও ভিকটিম তার সম্ভম রক্ষা করতে পারেনি। পাহারা বসিয়ে জোরপূর্বক ভিকটিমের সর্বস্ব লুটে নেয় ফরহাদ। পরে বান্ধবী রিমার সহযোগীতায় সে ওই বিল্ডিং থেকে চলে যান।
ভিকটিম আরো জানান,তার স্বামী শাহ আলম ছয় মাস আগে আবুধাবির কর্মস্থলে রয়েছে। বখাটে ফরহাদ নন্দীরপাড় ভূঁঞা বাড়ীর লেদু মিয়ার পুত্র। আর ভিকটিম ঢালুয়া সিরাজ মেম্বার বাড়ীর প্রবাসী শাহআলমের স্ত্রী।
রোববার বিকেলে একটি ভিডিওর সূত্রধরে ঢালুয়া সিরাজ মেম্বার বাড়ীতে সাংবাদিকরা ভিকটিমের সাক্ষাৎকার নিতে গেলে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসে।
এ ব্যাপারে ঢালুয়ার সাবেক মেম্বার সিরাজুল ইসলাম (৭৬) সম্ভমহানির ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারসহ কঠোর শাস্তির দাবী করেন।
একই এলাকার আনোয়ার হোসেন (৪৬) প্রবাসীর স্ত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় বিস্মিত হয়েছেন। তিনি দাবী করেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় ফরহাদের নেতৃত্বে চিহ্নিত প্রভাবশালীদের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ একটি কিশোর গ্যাং নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে।
ভিকটিমের বান্ধবী রিমা গণমাধ্যমকে জানান, তাদের বসতঘর থেকে ফরহাদের নেতৃত্বে তার বান্ধবীকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে ধর্ষণের ঘটনায় হতবাক হয়েছি। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি( তদন্ত) মো: ইকবাল হোসেন গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, ভিকটিমকে উদ্ধার করে আইনী সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের সত্যতা মিলেছে। ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ও ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য নোয়াখালীর বিজ্ঞ আদালতে নেওয়া হবে।
ওসি তদন্ত ইকবাল হোসেন আরো বলেন, ধর্ষণের মামলায় জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে। অল্পসময়ের মধ্যেই জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
