বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ছে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক 
ফাইলঃ ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর ভ্রমণের প্রাক্বালে তাকে স্বাগত জানিয়ে তৈরি পোস্টার লাগানো হয়েছে একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিং-এর থামে। (এপি)

করোনাকালেও বাংলাদেশে ব্যাপক হারে বাড়ছে চীনা বিনিয়োগ। চীন তাদের সার্বিক বিনিয়োগকে ধরে রেখে আরও ব্যাপক পরিসরে বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি খাতের উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। বিশেষ করে অবকাঠামো, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, পদ্মা সেতু, রেল লিংকসহ বিভিন্ন সরকারি খাতে চীনের বিনিয়োগ অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। বেসরকারি খাতও এ ব্যাপারে পিছিয়ে নেই। বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও চীন বিনিয়োগ করছে আলাদাভাবে। চীনের বিভিন্ন কোম্পানি কাজ করছে বাংলাদেশের টেলিফোন, বস্ত্র খাতসহ ব্যবসায়িক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন খাতে চীনের বিনিয়োগ করার কথা ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। তবে বড় ও মাঝারি পর্যায়ে বিনিয়োগ হয়েছে ২০০ কোটি ডলার। অপরদিকে বাংলাদেশকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়েছে চীন। প্রদত্ত এ সুবিধাকে ইতিবাচক মনে করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী। একই অভিমত ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনের নেতাদের। চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বিনিয়োগ অব্যাহতের আশাবাদ রাখেন।

বিনিয়োগ নিয়ে চীনের আশাবাদের সঙ্গে বিভিন্ন মহলে আছে উৎকণ্ঠাও। প্রতিবেশী ভারত বিষয়টিকে কীভাবে দেখছে সে বিষয়েও আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারতের বড় ধরনের একটা প্রভাব রয়েছে। আর চীন ও ভারতের সীমান্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে টানাপড়েন বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতি ও রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে কিনা সেই আলোচনাও আছে। বাংলাদেশের একজন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার সতর্কতার সঙ্গে সব ধরনের বিনিয়োগ ও সম্পর্ক ধরে রাখার পক্ষপাতী।

আর ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিশিষ্ট সাংবাদিক, সংসদ সদস্য এম জে আকবর ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, চীনের ব্যবসায়িক পার্টনারশিপ অনেক দেশের জন্য চূড়ান্ত পরিণতিতে ফল ভালো বয়ে আনেনি। ভারতও এখন ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ সম্পর্কে জোর দিচ্ছে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে অনেক দেশের হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি।

তবে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ মনে করেন, চীনা বিনিয়োগ বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক, উৎকণ্ঠার কিছু নেই। একই অভিমত অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদের। তারা দুজনই মনে করেন বাংলাদেশে এ মুহুর্তে বিদেশি বিনিয়োগ অনেক বেশি দরকার। বিনিয়োগে এগিয়ে আসা সব দেশকেই বাংলাদেশ স্বাগত জানাচ্ছে। নিজের স্বার্থরক্ষা করেই তা করছে। উৎকণ্ঠার কারণ নেই। বিদেশি বিনিয়োগ বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নকে ধরে রাখতে এবং এগিয়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম